বাহিরে রিমঝিম বৃষ্টি হচ্ছে এর মাঝে
কিছু ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা খেলা
করছে আর তার মাঝে ছিলাম আমি।
আমি আসিফ শহরে থাকি এখন আমি
গ্রামে বেড়াতে এসেছি । গ্রামে
আমার নানুর বাড়ী আর এখানে সবাই
আমার মামাতো বোন। আমরা যে
খেলাটা করছিলাম সেই খেলাটা সবার
জীবনের অত্যান্ত পরিচিত একটি
খেলা। ছোট কালে বাংলাদেশে এমন
কোন লোক নাই যে এই খেলা খেলে
নাই। খেলাটি হল বর বউ খেলা ।
এখানে ছেলে শুধু আমিই ছিলাম তায়
আমাকে বর হতে হল এবং এই খেলার
মাঝে আমার সাথে আছে আনিকা,
লাবন্য, রিতু, জান্নাতী, মারিয়া।এদের
মধ্যে বউ হত রিতু। তায় রিতি মত আজও
রিতু বউ হয়েছে। আর আনিকা বর পক্ষ,
লাবন্য বউ পক্ষ, জান্নাতী ঘটক এবং
মারিয়া কাজী। খেলাটি করতে আমার
খুব ভালো লাগতো তাই গ্রামে যখনি
আসতাম তখনি এই খেলাটি করতাম।
তাহলে কথা না বাড়িয়ে আমরা
খেলার ভেতরে চলে যায়।
লাবন্যঃ এই আনিকা একটু রিতুকে সুন্দর
করে সাজিয়ে দে আপু।
আনিকাঃ উ... আমি সাজাবো কেন
আমিতো বরের হয়ে খেলছি পারলে তুই
সাজিয়ে নে।
লাবন্যঃ তুই কেন এত হিংসা করিস
বলতো??
আনিকাঃ এখানে হিংসার কি দেখলি
যেটা নিয়ম সেটাই নিয়ম।
লাবন্যঃ ও আচ্ছা তুই নিয়ম দেখাচ্ছিস,
ঠিকাছে আমারো সুযগ আসবে তখন
দেখবো।
আনিকাঃ ঠিকাছে দেখিস। আমার কি
করতে পারিস আমিও দেখবো।
জান্নাতীঃ এই তোরা ঝগড়া করিস
নাতো। সেই তখন থেকে বক বক করতেই
আছে ।এই লাবন্য তুই সাজাতে না
পারলে আমাদের বল আমরা দেখছি তুই
আনিকাকে বলতে যাচ্ছিস কেন ও তো
জানিস যে একটু অন্য রকম।এই মারিয়া
আয়তো।
মারিয়াঃ আসতেছি।
রিতুঃ আচ্ছা আলমারিতে আমার একটা
লাল শাড়ী আছে ঐ শাড়ীটা নিয়ে
আসবো।
মারিয়াঃ আচ্ছা নিয়ে আয়, আবার
দেখিস তোর আম্মু বকবেনাতো?
রিতুঃ আরে না আম্মু বকবে কেন শাড়ী
আমার আমি পরবো আম্মু বকবে কেন?
মারিয়াঃ ঠিকাছে তাহলে নিয়ে আয়।
আনিকাঃ দেখলি আসিফ লাবন্য আমার
সাথে শুধু শুধু কেমন ঝগড়া করলো?
আসিফঃ হুম দেখলাম। খেলতে গেলে
এমন একটু হয় এইটা নিয়ে মন খারাপ
করলে হবে? মন খারাপ করিস না।
আমরা এখনি খেলা স্টার্ট করে দিব
তখন সব মন খারাপ ঠিক হয়ে যাবে।
আনিকাঃ ওকে ঠিকাছে।
এদিকে সবাই রিতুকে খুব সুন্দর করে বউ
সাজালো। লাল শাড়ী, লাল টিপ,
লিপিস্টিক
একেবারে একটা পরী বানিয়ে
ছেড়েছে। রিতুকে যখন আমার সামনে
এসে বসানো হল তখন রিতু কেমন জানি
সত্যিকারের বউদের মত লজ্জা পেতে
থাকলো। এবং মুচকি হাসি দিতে
থাকলো দেখে মনে হচ্ছে সত্যি সত্যি
একটা বউ আমার সামনে বসে আছে।
আমাকে তেমন ভাবে সাজানো হয়নি
কারন এখানে আমাকে সাজানোর মত
কোন ছেলে ছিল না সবাই ছিল মেয়ে
তবুও খারাপ লাগছে না একটা
পাঞ্জাবী আর নামাজ পড়ার জন্য যে
টুপি ব্যাবহার করা হয় সেই টুপি।
তারপর............
মারিয়াঃ আসিফ দেখতো রিতুকে
কেমন লাগছে ?
আসিফঃ খুব সুন্দর লাগছে মনে হচ্ছে
সত্যি সত্যি বউ বসে আছে আমার
সামনে। খুব সুন্দর করে সাজিয়েছিস
তোরা।
মারিয়াঃ ধন্যবাদ।
জান্নাতীঃ এই ঠিকাছে তাহলে
আমরা খেলা স্টার্ট করি মানে বিয়ে
পড়ানো শুরু করি।
আসিফঃ আচ্ছা ঠিকাছে।
মারিয়াঃ আসিফ তোমার সাথে এই
রিতুকে বিয়ে হবে তুমিকি কবুল???
আসিফঃ হ্যা কবুল।
মারিয়াঃ রিতু তোমার সাথে
আসিফের বিয়ে দিব তুমিকি কবুল?
রিতুঃ কবুল।
মারিয়াঃ ঠিকাছে বিয়ে পড়ানো শেষ
এখন তোমরা বউ নিয়ে তোমাদের বাড়ী
চলে যেতে পারো।
জান্নাতীঃ মারিয়া তুই কি আর সুন্দর
ভাবে বিয়ে পড়াতে জানিস না???
মারিয়াঃ না।
জান্নাতীঃ এর পরের খেলা থেকে তুই
ঘটক হবি আর আমি কাজী হব বুঝলি????
তখন দেখিস কিভাবে বিয়ে পড়াতে
হয়।
মারিয়াঃ ঠিকাছে দেখবো।
আনিকাঃ তাহলে কি আমরা রিতু
ভাবিকে আমাদের বাড়ি নিতে
পারি???
লাবন্যঃ যা নিয়ে যা।
আনিকাঃ আচ্ছা ঠিকাছে আমরা
তাহলে রওয়ানা দিলাম। চল আসিফ।
আসিফঃ চল তাহলে।
এরপর আমরা ঐ ঘরের এ মাথা থেকে ও
মাথা ঘুরে এক সাইডে একটা সুন্দর করে
একটা বিছানা পাতা আছে ওখানে
যেয়ে বসলাম। বসে আমাদের
সাংসারিক আলাপ করতে থাকলাম।
আসিফঃ আচ্ছা বউ আমাদের বাড়ি
কেমন লাগছে??
রিতুঃ খুব সুন্দর লাগছে।
আসিফঃ বউ তুমি কি কি রান্না করতে
পারো?
রিতুঃ আমি সব কিছুই রান্না করতে
পারি।
আসিফঃ তাহলে কাল থেকে তুমি আর
আনিকা আমার জন্য সুন্দর করে রান্না
বান্না করবা। আর আমি মাঠে কষ্ট করে
কাজ করে টাকা রোজগার করবো।
রিতুঃ ঠিকাছে ।
এরপর খেলার পরের দিন এল আমি মাঠে
কাজ করতে গেলাম আর ওরা দুইজন
রান্না করছে আর এদিকে অন্নান্যরা
চরিত্র বদলিয়ে আমাদের পরশি অথবা
আমাদের বন্ধু হয়ে গেল। আমি আর
মারিয়া দুইজন মাঠে কাজ করতে
গেলাম আর অন্যান্যরা রান্না বান্না
করছে। এরপর রিতুর বাচ্চা হয় বাচ্চাটি
তৈরি করা হয় পুতুল দিয়ে । রিতু তাকে
দুধ খাওয়ায়, গোছল করায়, কোলে নিয়ে
আনন্দ করে আরো কত কি। এভাবে
আমাদের খেলার সমাপ্তি ঘটে।
অবশেষে সবাই যখন ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ি
তখন খাওয়া দাওয়া করতে যায়। আমি
বেশির ভাগ রিতুদের বাসায় খেতাম।
রিতুদের সাথে আমার সম্পর্কটা একটু
বেশি ছিল। তাই যথারিতি রিতুদের
ঘরে আমি ও রিতু খেতে চলে গেলাম।
আর অন্যান্যরা অন্যান্যদের ঘরে চলে
গেল। আমি যখনি গ্রামে আসি বাবা
মায়ের সাথে আসি এসে সবায় একসাথে
এক জায়গায় খেলা করি আর খাওয়া
এবং ঘুমানোর সময় রিতুর সাথে থাকি।
এবং বাবা মা মামা, মামী, নানা,
নানী এদের সাথে গল্পগুজব করে এই আর
কি।
আসিফঃ রিতু মামানী কোথায়রে?
রিতুঃ কেন?
আসিফঃ খুব খুধা লেগেছে।
রিতুঃ মা মনে হয় তোর বাবা মায়ের
সাথে গল্প করছে। দাড়া ডেকে নিয়ে
আসি।
আসিফঃ না থাক পরে ডাকিস । আমি
আর তুই গল্প করি। আচ্ছা তোর রোল কত
যেন কত?
রিতুঃ ৪। তোর?
আসিফঃ আমার রোল তোর থেকে
অনেক বেশি ।
রিতুঃ কত?
আসিফঃ ১৫।
রিতুঃ সারাদিন বদমাইশি করলে
রোলতো ১৫ হবেই।
আসিফঃ যা বলেছিস আর কি। আচ্ছা
তোর ছেলে বন্ধু আছে???
রিতুঃ না!
আসিফঃ মিথ্যা বলবিনা সত্যি কথা
বল।
রিতুঃ সত্যি বলছি নেই। আমার
ছেলেদের ভেতর সম্পর্ক বেশি একমাত্র
তোর সাথে। আর কারো সাথে নেই।
আসিফঃ তাই??? ভালো।
রিতুঃ তোর বান্ধবী কইটা।।
আসিফঃ আমার সাথে যে মেয়েরা
পড়ে তারাতো সবাই আমার বান্ধবী।
রিতুঃ আমিতো ওভাবে বলিনি ওভাবে
বললেতো আমার স্কুলে আমার সাথে
যে ছেলেরা পড়ে তারাতো সবাই
আমার বন্ধু। আমি বলেছি ঘুব ঘনিষ্ট
বান্ধবী যাদের সাথে বেশি বেশি
কথা বলিস এমন।
আসিফঃ হ্যা এমন আছে দুই তিনটা।
রিতুঃ নাম কি??
আসিফঃ নাম..................... যেমন ধর
নাজমা, রত্না, সোনিয়া
রিতুঃ তাহলেতো তোর অনেক বান্ধবী।
আসিফঃ হুম্মম।
রিতুঃ একারনেই তো তোমার রোল এত
শুধু বান্ধবীদের সাথে ঘুরে ঘুরে বেড়াও
তা কি হবে।
আসিফঃ আরে না ঐ কারনে না আসলে
পড়তে ইচ্ছা করেনা।আচ্ছা তোর ছোট
বোন শায়লা কোথায়।
রিতুঃ ও মনে হয় মায়ের সাথে আছে।
আসিফঃ যা এখন তোর মাকে ডেকে
নিয়ে আয়।
মাঃ তোমাদের এবার ধান কেন হয়েছে
ফারহানা?
ফারহানাঃ আর বইলেন না বু বৃষ্টির
জন্যে এবার অনেক ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
এবার গতবারের চেয়ে ধান একটু কম
হয়েছে।
মাঃ আসলেই এবার বৃষ্টি মনে হয় একটু
বেশি হয়েছে, বৃষ্টিতো যেন তেন
হয়েছে তার চেয়ে বেশি হয়েছে ঝড়।
এই ঝড়ের কারনে একটু বেশি ক্ষতি
হয়েছে তাইনা ফারহানা?
ফারহানাঃ হ্যা বু।
রাশিদুলঃ বু এই ঝড় মনে কর ধানের সব
ডগা নষ্ট করে দেয় এই কারনে ধানের
ফলন হয়না।
মাঃ হুম্ম
রাশিদুলঃ এসব বাদ দেও দুখের কথা।
তা দুলাভাই মিষ্টি এবার এত কম নিয়ে
আসলেন ক্যান? জানেন না শশুর বাড়ী
মিষ্টি বেশি নিয়ে আসতে হয়।
বাবাঃ ওরে শালা মিষ্টি কম কোথায়
নিয়ে আসলাম ৫ কেজি মিষ্টি নিয়ে
এসেছি।
রাশিদুলঃ ধুর দুলাভাই এর মধ্যে ৪
কেজি মিষ্টি আমার আর মেজে
ভাইয়ের একাই লাগবে আর বাকি ৩
ভাই বউ দের মিষ্টি কই।
বাবাঃ ধুর শালা রাক্ষশ এত মিষ্টি
খাইলে পেটে ব্যাথা করবে।
রাশিদুলঃ পেটে ব্যাথা করলে আমার
আর মেজে ভাইয়ের করবে তাতে
আপনার কি? আপনার খাওয়ানোর দরকার
খাওয়াবেন। না মেজে ভাই?
রফিকুলঃ হ্যা তাতো অবশ্যই। শোনেন
দুলাভাই এর পরের থেকে আসলে
সর্বনিম্ন ১০ কেজি মিষ্টি নিয়ে
ঢুকবেন বুঝলেন?
বাবাঃ ঠিকাছে।
রিতুঃ মা চল ঘরে চল খুব খুধা লেগেছে।
ফারহানাঃ দুলাভাই চলেন খাওয়া
দাওয়া করে নেন।
বাবাঃ আরে না কতদিন পর শশুর বাড়ি
এসেছি শালা সুমন্ধি সব এক হয়েছি
আগে জম্পেশ আড্ডা দিই তারপর
খাবো। যাও তুমি রিতু মা আর আমার ঐ
বাদরটাকে খাইতে দিয়ে আসো। আর
আমার এই ছোট বাদরটাকেও নিয়ে যাও।
ফারহানাঃ শোভন চল।
শোভনঃ না আমি মায়ের সাথে খাব।
ফারহানাঃ তোমার কি একটুও মায়ের
কোল ছাড়তে ইচ্ছা হয়না বাপ?
মাঃ ও এমনি দেখছো না সব ছেলেপুলে
কি সুন্দর খেলা করছে আর ও কিনা
আমার কোলের মধ্যে বসে আছে।
ফারহানাঃ হ্যা তাইতো দেখছি।
ঠিকাছে তোমরা গল্প কর আমি ওদের
খেতে দিয়ে আসছি। চল রিতু, চল
শায়লা।
রিতুঃ চল মা।
এরপর রিতু, শাইলা এবং আমাকে
খাওয়া দাওয়া দিলেন ফারহানা
বেগম। তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ হলে
আমাদের জন্য বিছানা করে দিলেন।
সেই বিছানায় আমি শাইলা এবং রিতু
একসাথে ঘুমুলাম।পরেরদিন সকালে ঘুম
থেকে উঠে আবার সবাই এক জায়গায়
হলাম। আমার নানী বাড়ীর বাহিরে
সুন্দর গাছপালা সহকারে একটা বাগান
আছে ঐ বাগানে যেয়ে একটা
লেবুগাছের নিচে পাটি পেতে বসলাম।
মারিয়াঃ ভাইয়া রাত্রে ঘুম কেমন
দিলি।
আসিফঃ ঘুম ভালই হইছে কিন্তু ঐ রিতুর
বোন আমারে খুব অত্যাচার করেছে হাত
পা ছুড়ে।
রিতুঃ আর বলিসনা ওর পাশে আমি
ঘুমায় আমি জানি ও প্রচুর হাত পা
নাড়া চাড়া করে।
মাঝে মাঝে ওর মাথা আমার পায়ের
কাছে চলে যায়। খুব খারাপ ঘুম ওর।
আসিফঃ আসলেই অনেক খারাপ ঘুম।
আচ্ছা মারিয়া আজ কি আবার আমরা
বর বউ খেলবো?
মারিয়াঃ তাতো অবশ্যই!
আসিফঃ কাল অনেক সুন্দর হয়েছে
খেলাটা।
জান্নাতীঃ কাল বৃষ্টি পড়ছিল তায়
একটু একটু ঠান্ডার মধ্যে খেলতে খুব
ভালো লাগছিল।
আসিফঃ হুম্মম। চল আমরা মাঠে যায়
যেয়ে শাক তুলি।
জান্নাতীঃ এখন মাঠে যাবি?
আসিফঃ হ্যা।
রিতুঃ চল তাহলে।
আসিফঃ লাবন্য আর আনিকা কোথায়?
রিতুঃ মনে হয় বাসায় আছে চল ওদের
ডেকে একসাথে সবাই যায়।
আসিফঃ চল।
এরপর আমরা সবাই মিলে লাবন্য আর
আনিকাকে ডাকতে গেলাম। তার পর
ওদের সবাইকে নিয়ে মাঠে গেলাম।
মাঃ তোমাকে না বলেছি তুমি এই
বয়সে কাজ টাজ করবানা।
নানীঃ কি করবো বল সারাদিন বাড়ির
মধ্যে চুপ করে বসে থাকতে ভালো
লাগে?
মাঃ না লাগলেও চুপ করে বসে থাকবা।
আর আব্বা কি এখনো সিগারেট খায়?
নানীঃ হ্যা এখনো খায় এত নিষেধ করি
তবুও কথা শোনে না। বুড় মরতে বসেছে
তাও সিগারেট খাওয়া বাদ দিলোনা।
তোরা একটু নিষেধ টিষেধ কর।
মাঃ দাড়াও আজ আব্বাকে পেয়ে নিই
তারপর দেখছি। কোথায় গেছেন তিনি?
নানীঃ দেখ ঐ রহমতের চায়ের
দোকানে বসে চা বিড়ি দুইটায়
একসাথে টানছে মনে হয়।
মাঃ আসুক আজকে বাড়ী।
নানীঃ তোর বড় ছেলে আসিফ কোথায়?
মাঃ আছে হয়তোবা কোথাও।
রিতুঃ ঐ শরষের ভুইয়ের ভেতরে চল
ওখানে অনেক শাক পাওয়া যাবে।
জান্নাতীঃ চল।
আসিফঃ এই আনিকা তোরা দুইজন
সকালে কোথায় ছিলি?
আনিকাঃ আর বলিস না সকাল ধরে
বাসায় অনেক কাজ করতে হয়েছে তায়
একটু দেরি হয়ে গিয়েছে।
আসিফঃ আর তুই?
লাবন্যঃ আমি পড়তেছিলাম।
আসিফঃ ওহ আমার তো মনেই নেই
তুমিতো আবার ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট।
লাবন্যঃ কে বলেছে আমি
ব্রিলিয়ান্ট ?
আসিফঃ কেও না আমরা তো এমনিতেই
জানি।
রিতুঃ এই দেখ দেখ কি সুন্দর দুইটা
খরগশ!!
আসিফঃ কই ?
রিতুঃ তাড়াতাড়ি আয় দেখচ্ছি।
আসিফঃ কই?
রিতুঃ বস..................... ঐ দেখ।
আসিফঃ আরে তায়তো !!! এগুলা কার
খরগোশ।
সবাই জোরে জোরে হাসা শুরু করলো
আমার কথা শুনে।
আসিফঃ কিরে তোরা হাসছিস কেন?
রিতুঃ তুই কি পাগল বলতো? এই মাঠের
ভেতর কে খরগোশ ছেড়ে রাখবে। এই
খরগোশ গুলা এই মাঠেই হয়। বুঝলি বুদ্ধু?
আসিফঃ ও আমি মনে করলাম
খরগোশের খাওয়ানোর জন্য কেও
হয়তোবা এখানে ছেড়ে রেখে গেছে।
রিতুঃ পাগলরা এইটাই ভাবে।
আসিফঃ আমি পাগলা?
রিতুঃ হ্যা তুই একটা আস্ত পাগল।
আসিফঃ আচ্ছা যা আমি পাগল। রিতু
চল ঐ জোয়ারদার নানাদের বাগান
থেকে বেগুন আর লাল শাক চুরি করে
নিয়ে আসি।
রিতুঃ ঠিকাছে চল । এই তোরাকি
যাবি?
লাবন্যঃ না বাবা আমরা যাবোনা
আমাদের ঐসব চুরি টুরি করতে ভালো
লাগেনা।
রিতুঃ ভাল লাগেনা না সাহস হয় না
তা আমরা জানি। এই আসিফ চল।
আসিফঃ ঠিকাছে চল।
রিতুঃ আসলে আসিফ বুঝলি ওরা সব
কয়টা ভিতু।
আসিফঃ হুম্মম
রিতুঃ আসিফ দেখ কি সুন্দর ফুল।
আসিফঃ কোথায়?
রিতুঃ ঐ দেখ।
আসিফঃ দাড়া আমি তোর জন্য ফুল
নিয়ে আসছি।
রিতুঃ ঠিকছে যা !
এরপর আমি যেয়ে তিনটা ফুল ছিড়ে
নিয়ে রিতুর কানের উপরে গুজে দিলাম।
আসিফঃ খুব সুন্দর লাগছে তোকে।
রিতুঃ তায় ! ধন্যবাদ।
আসিফঃ চল বেগুন তুলি।
রিতুঃ চল।
এরপর আমরা বেগুন তুলতে বেড়ার নিচ
দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। ঢুকে যেইনা ৪-৫
টা বেগুন তুলেছি অমনি একটা লোক
হুঙ্কার দিয়ে উঠলো এই কারারে !!
অমনি আমি আর রিতু ছুটে পালালাম।
পালাতে পালাতে রিতুর পায়ে কাটা
ফুটলো।
তখন আমি ওকে নিয়ে একটা আড়ালে
গেলাম। যেয়ে দেখি ওর পায়ে খেজুরের
কাটা ফুটেছে।
রিতুঃ উফ অনেক ব্যাথা করছে।
আসিফঃ দাড়া আমি দেখছি তুই চুপ
করে বোস।
এরপর আমি ওর পা থেকে কাটাটি বের
করলাম। তারপর দুবলা ঘাস চিবিয়ে
তার রস ওর পায়ে লাগিয়ে দিলাম।
এরপর ও ঠিক মত হাটতে পারছেনা তাই
আমার কাধে ওর ভার দিয়ে হেটে
চল্লাম। তারপর আমাদের অন্যান্য
সঙ্গীদের কাছে চলে গেলাম। তারপর।
লাবন্যঃ কিরে আসিফ কি হয়েছে?
আসিফঃ আর বলিসনা এর পায়ে কাটা
ঢুকেছে।
লাবন্যঃ কিভাবে?
আসিফঃ ঐ বাগানের লোক আমাদের
দাবড় দিয়েছিল তাই পালাতে যেয়ে
ওর পায়ে কাটা ফুটেছে।
লাবন্যঃ এইবার বোঝ যা চুরি করতে যা
। চুরি করতে গেলে এমনি হয় বুঝলি?
রিতুঃ তাইতো দেখছি। উফ চল বাসায়
যায়।
এরপর আমরা সবাই বাসায় চলে
আসলাম। বাসায় আসার পর শাক আর
বেগুন মামানিকে দিয়ে রান্না করতে
বললাম তখন মামানি আমাদের
বকাঝকা দিল যে চুরি করতে হয়না।
আরো কতকি। তারপর আমার মা এসে
আবার আমাকে বকলো। বল্ল সব আমার
দোষ আমি মাঠে না গেলে এমন হতনা।
তার পর বকা দিয়ে বল্ল গোছল করে
নিতে। এরপর আমরা একে একে গোছল
করে আমাদের তোলা শাক দিয়ে ভাত
খেলাম খাওয়া দাওয়া শেষে আমি আর
রিতু সেই লেবু গাছের নিচে পাটি
পেতে বসলাম।
রিতুঃ তোরা কবে যাবি?
আসিফঃ কেন আমাদের কি
তাড়াতাড়ী যেতে বলছিস নাকি?
রিতুঃ আরে না এমনিতেই জিজ্ঞাসা
করছি।
আসিফঃ কাল চলে যাব।
এই কথা শুনে রিতুর হাসিখুসি মনটা
খারাপ হয়ে গেল।
আসিফঃ কিরে চুপ করে গেলি কেন?
রিতুঃ এমনিতেই। আর কয়েকদিন পরে
গেলে হতনা?
আসিফঃ না বাবার ছুটি শেষ হয়ে
গিয়েছে। তায় যেতেই হবে।
রিতুঃ তোরা আসলে আমার খুব ভালো
লাগে। আর যখন চলে যাস তখন আর একটুও
ভালো লাগেনা। মনে হয় কি যেন চলে
গেছে। তোর কি এমন মনে হয়?
আসিফঃ হয় প্রথম প্রথম। তারপর ঠিক
হয়ে যায়।
রিতুঃ ঠিক তো হবেই তোর তো আবার
অনেক বান্ধবী।
আসিফঃ আরে না আমার ঐ বান্ধবীদের
চেয়ে তোদের অনেক ভালোবাসি আমি
বুঝলি?
রিতুঃ সত্যি???!!!
আসিফঃ হ্যা।
রিতুঃ আসিফ তুই শহরে গেলে আবার
আমাকে ভুলে যাবি নাতো?
আসিফঃ কি বলিস ভুলে যাবো কেন?
রিতুঃ না অনেকেতো আবার দূরে চলে
গেলে মানুষকে ভুলে যায় তাই বললাম
আর কি।
আসিফঃ আমি অমন মানুষনা।
রিতুঃ না হলেই ভালো।
এমন সময় ঐ জায়গায় উপস্থিত হল
মারিয়া এবং লাবন্য।
মারিয়াঃ কিরে কি করিস তোরা?
আসিফঃ এইতো বসে আছি।
রিতুঃ তোরা জানিস আসিফরা কাল
শহরে চলে যাবে।
মারিয়াঃ তাই এটাতো জানতাম না।
তা আর কয়েক দিন থাক।
আসিফঃ আরে না বাবার ছুটি শেষ হয়ে
গিয়েছে।
মারিয়াঃ ঠিকাছে তাহলে যা ।
আটকাতেতো পারবোনা।
রিতুঃ হ্যা সেটাই !
আসিফঃ এই শোন আজ এইবারের মত আজ
শেষ বিয়ে বিয়ে খেলি। নাকি?
রিতুঃ তাতো খেলবোই এখন চল একটু
মাঠের দিক থেকে ঘুরে আসি।
আসিফঃ চল তাহলে।
এরপর আমরা গ্রামের স্নিগ্ধ সুন্দর সবুজ
ধান খেতের পাশে যেয়ে বসলাম। বসে
আমরা অনেক মজা করলাম। আমরা সবাই
ধানের আইলের উপর দিয়ে দুহাত ছড়িয়ে
প্রজাপতির মত হেটে বেড়াচ্ছিলাম।
যেহেতু আমি গ্রামে থাকিনা তাই
আমার ধানের আইলের উপর হাটতে কষ্ট
হচ্ছিল। এরপর সন্ধ্যা হলে আমরা সবাই
বাসায় ফিরে আমাদের খেলার স্থানে
গেলাম।
জান্নাতীঃ এই শোন আজ কিন্তু আমি
কাজী হব। কারন মারিয়া একটুও বিয়ে
পড়াতে জানেনা।
মারিয়াঃ দেখবো তুই কেমন পারিশ।
জান্নাতীঃ ঠিকাছে দেখিস। আচ্ছা
শোন আজ বিয়ের বসার জায়গাটা একটু
সুন্দর করতে হবে।
মারিয়াঃ কিভাবে সুন্দর করবো?
জান্নাতীঃ এই খাটের চারিপাশে
সুন্দর করে শাড়ী দিয়ে ঘিরতে হবে।
আর বর এবং বউ এর জন্য মাঝখান দিয়ে
আর একটা শাড়ী দিয়ে আলাদা আর
একটা রুম বানাতে হবে ঠিকাছে?
মারিয়াঃ হ্যা তাহলে খুব সুন্দর হবে
তাহলে চল সবাই কাজ শুরু করে দিই।
এরপর আমরা সবাই মিলে হাতে হাতে
কাজ করে একটা সুন্দর করে বিয়ের মন্ডব
ও ঘুমানোর জায়গা তৈরি করলাম।
তারপর রিতুকে আগের দিনের মত লাল
শাড়ী পরিয়ে লিপিস্টিক টিপ পরিয়ে
রেডি করলো। আর আমাকে বর
সাজালো। তারপর.........
আনিকাঃ এই চল তাহলে খেলা শুরু করে
দিই।
মারিয়াঃ ঠিকাছে। আর বিয়ে কি
আমি পড়াবো না তুই পড়াবি
জান্নাতী?
জান্নাতীঃ আমি
মারিয়াঃ আচ্ছা ঠিকাছে । তাহলে
বিয়ে পড়ানো স্টার্ট করে দে।
জান্নাতীঃ উপশহর নিবাসী মোঃ
করিম শেখের ছেলে আসিফের সাথে
৫০০০০ টাকা দেনমহরে তোমার বিয়ে
হবে তুমিকি কবুল?
রিতুঃ কবুল।
জান্নাতীঃ আল হামদুলিল্লাহ। শেখ
পাড়া নিবাসী রহিম মন্ডলের মেয়ে
মোছাঃ রিতু খাতুনের সাথে ৫০০০০
টাকা দেনমহরে বিয়ে করতে রাজি
থাকলে বলুন কবুল।
আসিফঃ কবুল।
জান্নাতীঃ আল হামদুলিল্লাহ।
তাহলে এখন আসুন আমরা মোনাজত
ধরি।
মারিয়াঃ হ্যা বুঝতে পেরেছি তুমি বড়
হলে অনেক বড় কাজী হবা কিন্তু এখন
আর মোনাজত ধরার দরকার নাই। বাবা
মনে হচ্ছে সত্যি কারের বিয়ে হচ্ছে।
জান্নাতীঃ সত্যি হোক আর মিথ্যা
হোক আমাদের খেলার খাতিরে
আমাদের সত্যির সাথে তাল মিলিয়ে
চলতে হবে। এই সবাই মোনাজত ধর।
এরপর মোনাজত হলো তারপর আমাকে
আর রিতুকে এক সাইডে দিল আর ওরা
অন্য সাইডে থাকলো। যখন রিতু আমার
সামনে এসে বসলো তখন ওর দিকে
তাকাতেই কেন জানি আমার বুকের
ভেতর ধুক ধুক করে উঠলো। মনে হল আমি
মনে হয় আমার জীবনের সবচেয়ে দামী
জিনিসটা খুজে পেয়েছি। কেন জানি
মনে হল এখানে যারা আছে তাদের
থেকে রিতু আমার কাছে সব চেয়ে
আপন। আজ কেন জানি ওকে সামনে
পেয়ে আমার মনের মধ্যে অন্যরকম এক
অনুভুতি হচ্ছে। এটাকে যদি
ভালোবাসা বলে তবে আমি মনে হয় ঐ
বয়সে রিতুর প্রেমে পড়েছিলাম। যায়
হোক ঐ সময় তেমন কিছু বুঝতাম না তায়
কথাটা নিজের মনের মধ্যেই চেপে
রাখলাম এবং ভাবলাম এটা মনে হয়
আবেগের কারনে হচ্ছে। আজ রিতুকে গত
দিনের চেয়ে অনেক সুন্দর লাগছে। রিতু
আমার সামনে বসে আছে আর ওর
নিশ্বাষের গরম হাওয়া ক্রমাগত আমার
গায়ে লাগছে।
রিতুঃ কিরে আসিফ চুপ করে বসে
আছিস কেন?
আসিফঃ হ্যা।
রিতুঃ বলছি চুপ করে বসে আছিস কেন?
আসিফঃ কই চুপ করে বসে আছি।
রিতুঃ আমার ঘুমটাটা একটু ভালো করে
সরিয়ে দেখ।
আসিফঃ হুম্ম
দাড়া............................................. ওয়াও
অনেক সুদর লাগছে তোকে।।
রিতুঃ সত্যিই?
আসিফঃ সত্যি মানে অনেক সত্যি আর
যে তোর সত্যকারের বর হবে। বাসর
রাতে সে যখন তোর ঘুমটা খুলবে তখন
হয়তোবা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবে।
রিতুঃ কিজে বলিস না উল্টাপাল্টা সব
কথা।
আসিফঃ না সত্যি।
রিতুঃ আর তোর কি হবে?
আসিফঃ আমার আর কি, আমি যখন বউ
এর মুখ দেখার জন্য তার ঘুমটাটা খুলবো
তখন আমিতো আমার বউকে দেখে খুব
খুশি হব কিন্তু আমার বউ আমাকে
দেখার পর ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে
দিবে এক দোড়।
রিতুঃ হা হা হা হা কিযে বলিসনা কই
আমিতো তোকে দেখার পর দোড়
দিলামনা।
আসিফঃ তুই দোড় দিবি কেন তুইতো
আমাকে ভালকরে চিনিস কিন্তু যার
সাথে আমার বিয়ে হবে সে হইতোবা
আমাকে নাও চিনতে পারে। আচ্ছা বাদ
দে ওসব কথা চল দেখি ওরা কি করে।
রিতুঃ চল।
আসিফঃ হ্যা আপুনিরা তোমরা কি কর?
জান্নাতিঃ এইতো আমরা রান্না
বান্না করছি।
আসিফঃ তা কি রান্না হচ্ছে?
জান্নাতিঃ দেখছোনা গরুর মাংস,
ডাল, পুইশাক।
আসিফঃ তাড়াতাড়ি রান্না কর আর
আমার বউকে রান্না করা শিখিয়ে
দাও।
জান্নাতিঃ ঠিকাছে দিচ্ছি ভাবি
তুমি ভাইকে গামছা আর বদনাটা এনে
দাও ভাই গোছল করে নিক।
রিতুঃ আচ্ছা ঠিকাছে।
এভাবে চলতে চলতে আমাদের খেলা
শেষ হল। পরে আমি আর রিতু রিতি মত
রিতুদের ঘরে চলে গেলাম।
মাঃ আব্বা তুমি নাকি এখনো
সিগারেট খাউ?
নানুঃ কি বলছিস এসব মা তোকে কে
বলেছে?
মাঃ যেই বলুক তুমি বল খাও কিনা?
নানুঃ ইয়ে মানে না।
মাঃ দেখ আব্বা মিথ্যা বল্বানা শেষ
বয়সে এসে মিথ্যা বলতে তোমার লজ্যা
করে না?
নানুঃ এই বুড়ি যত নষ্টের গোড়া, এই
বুড়ি তোকে সব কথা বলে দিয়েছে
তাইনা?
মাঃ হ্যা এই বুড়িই বলছে । বুড়িতো
তোমার ভালোর জন্যেই বলেছে নাকি?
আচ্ছা সে যায় হোক আজ তোমাকে
আমার গা ছুয়ে প্রতিজ্ঞা করতে হবে
যে তুমি আর কখনো সিগারেট খাবানা।
নানুঃ দেখ মা তোকে বলি ভাত
খাওয়ার পর একটা বিড়িতে টান না
দিলে শরীরের মধ্যে একটুও ভালো
লাগেনা।
মাঃ তাহলে আমাদের ভালো লাগে
কিভাবে?
নানুঃ তোরাতো খাস না তা বুঝবি
কিভাবে?
মাঃ আমি আত সত বুঝিনা তুমি যদি
আমার গা ছুয়ে প্রতিজ্ঞা না করো
তাহলে আর কোনদিন তোমার সাথে
দেখা করতে আসবোনা।
নানুঃ দেখ বুড়ি তোর জন্য আজ আমার
কত কষ্ট। ঠিকাছে এই তোর গা ছুয়ে
বললাম আর কোনদিন সিগারেট
খাবোনা।
মাঃ এইবার ঠিকাছে, তাহলে এরপর
তুমি যদি খাও তাহলে খবর আছে।
নানুঃ আচ্ছা ঠিকাছে। সে যায় হোক
তোর বড় ছেলে কোথায়?
মাঃ মনে হয় রিতুদের ঘরে।
নানুঃ ওকে একটু ডাক ওর সাথে একটু কথা
বলি।
মাঃ শায়লা মা আসিফকে একটু ডেকে
নিয়ে আসোতো।
শায়লাঃ ঠিকাছে আন্টি নিয়ে
আসছি।
মাঃ আসিফটা যা হয়েছে না
শারাদিন শুধু টই টই।
নানুঃ পড়াশুনা কেমন করে?
মাঃ পড়াশুনা আছে কোনরকম।
আসিফঃ রিতু আমি চলে গেলে তোর
কেমন লাগবে?
রিতুঃ সকালেই তো বললাম অনেক
খারাপ লাগবে।
আসিফঃ আমারো তোদের ছেড়ে
থাকতে অনেক খারাপ লাগবে।
রিতুঃ কেন খারাপ লাগবে। তোর তো
অনেক বান্ধবী।
আসিফঃ তা আছে কিন্তু তোদের সাথে
আমার যেমন সম্পর্ক ওদের সাথে তেমন
সম্পর্ক নাই বুঝলি?
রিতুঃ হুম্মম্মম।
শায়লাঃ আসিফ ভাইয়া ! আসিফ
ভাইয়া।
আসিফঃ কে
শায়লাঃ আমি ভাইয়া আপনাকে
আন্টি ডাকছে।
আসিফঃ কোথায় মা।
শায়লাঃ ঐতো দাদুদের ঘরে।
আসিফঃ এই রিতু চল।
রিতুঃ চল।
এরপর আমি রিতু আর শায়লা রয়ানা
দিলাম রিতুর দাদুদের ঘরে আথবা
আমার নানুদের ঘরে।
আসিফঃ মা আমাকে ডাকছো?
মাঃ হ্যা সারাদিন কোথায় থাকিস?
আসিফঃ এইতো মা রিতুদের ঘরে
ছিলাম।
মাঃ কি ব্যাপার নানু ভাইকে সালাম
দিস না কেন?
আসিফঃ নানু ভাই
আসসালামুয়ালাইকুম।
নানুঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম নানু
ভাই। তুমিতো আমার সাথে ঠিক মত
দেখাই করোনা।
আসিফঃ আসলে সারাদিন ব্যাস্ত
থাকিতো তাই আর কি?
মাঃ কি করেন আপনি স্যার সারাদিন
যে এত ব্যাস্ত থাকেন?
নানুঃ আরে মা ওভাবে বকিস না
ছেলেটাকে। তা নানু ভাই তোমার
পড়ালেখা কেমন হচ্ছে?
আসিফঃ খুব ভালো হচ্ছে নানুভাই।
নানুঃ তায় তা তুমি জানি এখন কোন
ক্লাসে পড়?
আসিফঃ ক্লাস ফাইভে।
নানুঃ তায় ওরে বাবা তুমিতো অনেক
বড় হয়ে গেছ হ্যা ।এবারতো তোমার
বিয়ে দিতে হবে।
আসিফঃ কিযে বলেন নানু ভাই।
নানুঃ আমাদের রিতু, লাবন্য, আনিকা
এরাওতো ক্লাস ফাইভে ওঠে গেছে শুধু
মাত্র জান্নাতী আর মারিয়া ক্লাস
সিক্সে। তা তোমার রোল কত নানু
ভাই?
আসিফঃ নানু ভাই আমার রোল ১৫।
নানুঃ তায় খুব ভালো তা ক্লাস
সিক্সে উঠে তোমার রোল আমি ৫ এর
ভেতরে চায় তাহলে তোমার জন্য একটা
সুন্দর পুরস্কার আছে।
আসিফঃ ঠিকাছে নানু ভাই।
নানুঃ আর রিতু আসিফরা আসার পরে
কি পড়াশুনা একটুও করেছো নাকি শুধু
খেলা করেছ?
রিতুঃ না দাদু পড়েছি।
নানুঃ ঠিকাছে তাহলে যাও।
রিতুঃ আচ্ছা ঠিকাছে আসিফ চল
তাহলে।
মাঃ কিরে নানু ভাইকে সালাম দিয়ে
যা।
আসিফঃ নানু ভাই
আসসালামুয়ালাইকুম।
নানুঃ আচ্ছা ঠিকাছে যাও। তোর
ছেলেটা অনেক ভালো।
মাঃ ভালো ও চরম দুষ্টু।
নানুঃ ও ছেলেরা একটু দুষ্টু হয়। ওতে কিছু
হয়না।
মাঃ না হলেই ভালো।
নানীঃ তোর ছেলে শহরে গেলে
কিভাবে থাকে রিতুদের ছেড়ে।
এখানে আসার পর থেকেতো সারাদিন
রিতুদের সাথে।
মাঃ ও মনে করো প্রথম প্রথম একটু মন
খারাপ করে থাকে পরে সব ঠিক হয়ে
যায়। আর ওর স্কুলের বন্ধু বান্ধব
আছেনা।
নানীঃ ও আচ্ছা, জামায় কোথাই?
মাঃ মনে হয় আমাদের ঐ বাড়ী
গিয়েছে।
নানীঃ কাল কখন যাবি বলে ঠিক
করেছিস?
মাঃ ভাবছি দুপুরে খেয়ে তারপর
যাবো।
নানুঃ আবার কবে আসবি মা?
মাঃ আবার আসলে মনে হয় আগামী
ঈদে আসবো।
নানুঃ ঈদতো সামনে মাসে।
মাঃ হ্যা, আসিফদের স্কুল ছুটি ও ওর
বাবার অফিস ছুটি দিলেই চলে আসবো।
নানুঃ এবার একটু ছুটি বেশি নিয়ে
আসিস।
মাঃ দেখি তোমায় জামায় কি করে।
আসিফঃ আজ খুব খেলাম চল ঘুমিয়ে
পড়ি।
রিতুঃ চল।
আসিফঃ বিছানাটা একটু সুন্দর করে কর।
রিতুঃ ঠিকাছে। আসিফ এই চাদরটা একটু
ধর।
আসিফঃ দে।
রিতুঃ হ্যা এইবার ঐ মাথার দিকে
নিয়ে যা।
শায়লাঃ আসিফ ভাই একটু সুন্দর করে
ধরেন।
আসিফঃ ধুর আমি এসব পারি নাকি।
রিতুঃ তুইতো কিছুই পারিস না।
আসিফঃ হুম্ম আমি এসব করবো কেন এসব
করে মেয়ে মানুশ যেমন আমার মা
আমার বিছানা ঠিক করে দেই।
রিতুঃ নে এবার শুয়ে পড়।
আসিফঃ তুই শুবিনা???
রিতুঃ হ্যা দাড়া আগে চুলটা বেধে
নিই।
এরপর আসিফ ও শায়লা শুয়ে পড়লো
তারপর রিতু চুল্টুল বেঁধে এসে শুল।
রিতুঃ তোরা চলে গেলে আমি কি
করবো ভেবে পাচ্ছিনা।
আসিফঃ আমিও আমারো তোদের ছেড়ে
থাকতে ভালো লাগবেনা।
রিতুঃ আচ্ছা আসিফ যখন তুই বাসায়
একা একা থাকিস তখন কি আমাদের
কথা তোর মনে পড়ে?
আসিফঃ হ্যা খুব মনে পড়ে? তোর কেমন
মনে পড়ে??
রিতুঃ আমারো খুব মনে পড়ে। কি আর
বলবো তোরতো একা থাকলে মনে পড়ে
আর আমার সব সময় মনে পড়ে।
আসিফঃ তায়??
রিতুঃ হুম্ম
এসব আলোচনা করতে করতে তারা এক
পর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়লো। পরের দিন
সকালে আমার মা এসে আমাদের ডাকা
শুরু করলো। পরে আমরা ঘুম থেকে
ঊঠলাম।
মাঃ আসিফ তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নে।
আসিফঃ কেন মা আমরাতো দুপুরে
যাবো।
মাঃ না যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু এখন
আর হচ্ছে না। কারন তোর বাবার অফিস
থেকে ফোন দিয়েছিল। আমাদের এখনি
যেতে হবে।
আসিফঃ আচ্ছা ঠিকাছে মা তুমি যাও
আমি আসছি।
এরপর আসিফ তার কাপড় গোছাতে
লাগলো। এর মাঝে রিতু এসে
রিতুঃ কিরে আসিফ এখনি কাপড়
গোছাচ্ছিস কেন?
আসিফঃ আমরা এখনি চলে যাবো।
রিতুঃ তোরা নাকি দুপুরে যাবি
শুনলাম তাহলে এখন যাওয়ার কথা
বলছিস কেন?
আসিফঃ আর বলিসনা বাবার অফিস
থেকে ফোন দিয়ে বাবাকে এখনি
যেতে বলেছে।
Tuesday, March 15, 2016
New
বর বউ খেলা Part 1
About NRS NISSAN
alistarbot is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of alistarbot is to provide the best quality blogger templates.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
কিভাবে একজন সফল ব্লগার হিসেবে নিজেকে তৈরি করবেন
সফল বলি। একজন সফল ব্লগার হিসেবে যদি আপনি নিজেকে প্রস্তুত করতে চান তবে আপনাকে কয়েকটি বিসয়ের উপরে খুব ভালোভাবে গুরুত্বারোপ করতে হবে। নিম্নে ব...
প্রেমের ছন্দ এর মতো পড়ে খুব ভালো লাগলো।
ReplyDelete