২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। - bdwritten.blogspot.com

Latest

ভালোবাসার গল্পো ,কবিতা,গান, ও না জানা কথা দিয়ে সাজানো

Saturday, February 20, 2016

২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক
মাতৃভাষা দিবস। এ দিবস শোকের,
গর্বের, অহংকারের। অমর একুশে:: এক
রক্তাক্ত স্মৃতির ইতিহাস::
একুশের সংক্ষিপ্ত পটভূমি: ১৯৪৭ সালে
ভারতের সাথে দেশ ভাগের পর ভাষা,
সংস্কৃতি ও ভৌগলিক অবস্থান ভিন্ন
হওয়া সত্ত্বেও শুধু মাত্র ধর্মীয় সংখ্যা
গরিষ্ঠতার উপর ভিত্তি করে পূর্ব
পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান দুটি
সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অঞ্চল নিয়ে
পাকিস্তান একটি রাষ্ট্র গঠিত হয়।
জনসংখ্যার দিক দিয়ে পশ্চিম
পাকিস্তান সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও
সিভিল সার্ভিস, মিলিটারী ও
গুরত্বপূর্ণ সব রাষ্ট্রীয় পদে তাদের
আধিপত্য বেশী ছিল। ক্রমে তারা
নিজেদের শাসনকর্তা ও বাঙ্গালীদের
প্রজা ভাবতে শুরু করলেন। নব গঠিত
রাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থা ও রাষ্ট্র
পরিচালনার জন্য তারা উর্দূ ভাষাকে
রাষ্ট্রভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠার
পরিকল্পনা করতে থাকেন। এই
পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে ঢাকায়
ঢাকায় "তমদ্দুন মজলিশের"
সেক্রেটারী অধ্যাপক আবুল কাসেমের
নেতৃত্বে এক প্রতিবাদ সভা ও রালি
বের করা হয় এবং সভায় বাংলাকে
উর্দূর পাশাপাশি রাষ্ট্রভাষা করার
দাবী করা হয়। এবং এই অবস্থার
প্রেক্ষিতে ১৯৪৭ এর ডিসেম্বর মাসে
"রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ" গঠন করা
হয়। তারপরও তাদের ষড়যন্ত্র চলতে
থাকে।
পাকিস্তান সরকারের বিভিন্ন
আত্নকেন্দ্রিক সিদ্ধান্তের কারনে
আবারো সোচ্চার হয়ে উঠে বাঙ্গালী
ফলে ১১ই মার্চ ১৯৪৮ সালে বাংলাকে
রাষ্ট্রভাষার দাবীতে পুনরায় মিছিল
করা হয় এতে..শেখ মুজিবর রহমান,
কাজী গোলাম মাহাবুব, অলি আহাদ,
শওকত আলী, সামসুল হক প্রমূখ গ্রেফতার
হন।
তারপর ২১শে মার্চ ১৯৪৮ সালে ঢাকার
রেস র্কোস ময়দানে তৎকালিন গভর্ণর
জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ দৃঢ়
ভাষায় ঘোষনা করেন "উর্দূ, এবং উর্দূই
হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা"।
আবারো সোচ্চার হয়ে উঠে বাঙ্গালী,
এমন সিদ্ধান্ত কখনো মানবো না এই
দাবী উঠে সারা বাংলায়।
এভাবে আরো ৪ বৎসর অতিবাহিত হয়
তারপরও পশ্চিম পাকিস্তানীদের
ষড়যন্ত্র থামেনা।
২৭শে জানুয়ারী ১৯৫২ সাল
পাকিস্তানের নব নিযুক্ত গর্ভণর
জেনারেল খাজা নাজিম উদ্দিন
ঢাকায় এসে পুনরায় ঘোষনা দেন "উর্দূই
হবে পাকিস্তানের একমাত্র
রাষ্ট্রভাষা"। এই ঘোষনা শুনার পর
গর্জে উঠে বাঙ্গালী জাতি,
প্রতিবাদে জ্বলে উঠে সারা বাংলা।
২১শে ফেব্রুয়ারী সর্বদলীয় সংগ্রাম
পরিষদ র্কতৃক বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা
করার দাবীতে হরতালের ডাক দেওয়া
হয়।
২১শে ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ সাল ৮ই ফাল্গুন
১৩৫৯ বঙ্গাব্দ সকাল ৯টা হতে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের জড়ো হতে লাগলো
ছাত্র জনতা। ঐতিহাসিক আমতলা তখন
লোকে লোকারণ্য। পাকিস্তান সরকার
ঐ দিন ঢাকায় ১৪৪ ধারা ঘোষনা করেন।
একসময় সমবেত ছাত্র জনতা ১৪৪ ধারা
ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন এবং
গাজীউল হকের নেতৃত্বে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ
করে সবাই মিছিল নিয়ে ঢাকা
মেডিকেলের দিকে অগ্রসর হতে
থাকে। মিছিল যখন ঢাকা
মেডিক্যালের কাছাকাছি আসে তখন
শুরু হয় পুলিশের এলোপাতাড়ি
গুলোগুলি। গুলিতে সাথে সাথে
মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রফিক, জব্বার,
সালাম ও বরকত। বুলেটের আঘাতে
রফিকের মাথা ফেটে মগজ বের হয়ে
পড়ে। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে জব্বার ও
বরকত ঐ দিন রাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে
পড়নে। আহত অবস্থায় ২৫শে ফেব্রুয়ারী
রাতে মারা যান সালাম।
২২শে ফেব্রুয়ারী সকালে রাতখোলা
নবাবপুরে ২১শে ফেব্রুয়ারীতে গুলিতে
শহীদের জন্য প্রতিবাদ সভা ও মিছিল
বের করা হয় এতে পুলিশের র্নিবিচারে
গুলি আরম্ভ হয়....ঐ গুলিতে শহীদ হন
শফিউর রহমান এবং ৯ বৎসর বয়সী
অহিউল্লা পিতা রাজমিস্ত্রি হাবিবুর
রহমান ও রিক্সা চালক ২৬ বৎসর বয়সী
আব্দুল আউয়াল।
এই ২১শে ফেব্রুয়ারী বা ৮ই ফাল্গুন
বর্তমানে প্রতি বৎসর আর্ন্তজাতিক
মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পৃথিবীর সব
দেশ একযোগে পালন করেন। ১৭ই নভেম্বর
১৯৯৯ সালে ইউনোস্কো ২১শে
ফেব্রুয়ারীকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা
দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেন এবং ২০০০
সাল থেকে সারা বিশ্ব এই দিবসটিকে
আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস
হিসেবে পালন শুরু করেন।
আমাদের ভাষা শহীদ:
ভাষা শহীদ রফিক (১৯২৬-১৯৫২)
জন্ম : ৩০শে অক্টোবর ১৯২৬ সাল ৷
জন্মস্থান : পারিল গ্রাম, ইউনিয়ন-
বলধারা, থানা-সিঙ্গাইর,মানিকগঞ্জ।
মৃত্যু : ২১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৫২ সাল ৷
সমাধি স্থল : ঢাকার আজিমপুর এই
পুরানো কবরস্থানের হাজারো কবরে
ভীড়ে মহান ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন
আহমেদ চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন যার
কবরের চিহ্ন পাকিস্তানী সরকার
রাখেনি ৷
শহীদ আব্দুল জব্বার(১৯১৯-১৯৫২)
জন্ম : ১০শে অক্টোবর ১৯১৯ইং বা
বাংলা ২৬শে আশ্বিন ১৩২৬ বঙ্গাব্দ ৷
জন্মস্থান : ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও
উপজেলার পাঁচুয়া গ্রামে ৷
মৃত্যু : ২১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৫২ সাল ৷
সমাধি স্থল : ঢাকার আজিমপুর পুরানো
কবরস্থানে ৷
শহীদ আবুল বরকত(১৯২৭-১৯৫২)
জন্ম : ১৬ই জুন, ১৯২৭ ইং ৷
জন্মস্থান : ভারতের পশ্চিম বঙ্গের
মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহাকুমার
ভরতপুর থানার বাবলা গ্রামে ৷
মৃত্যু : ২১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৫২ সাল ৷
সমাধি স্থল : ঢাকার আজিমপুর পুরানো
কবরস্থানে ৷
শহীদ আবদুস সালাম (১৯২৫-১৯৫২)
জন্ম : ১৯২৫ সাল ৷
জন্মস্থান : ফেনী জেলার দাগনভুঁইঞা
উপজেলার লক্ষণপুরে।
মৃত্যু : ২৫ ফেব্রুয়ারী, ১৯৫২ সাল, সরকারী
গেজেটে ৭ই এপ্রিল ১৯৫২ ৷
সমাধি স্থল : ঢাকার আজিমপুর পুরানো
কবরস্থানে ৷
শফিউর রহমান(১৯১৮-১৯৫২)
জন্ম : ২৪ জানুয়ারী ১৯১৮ সাল ৷
জন্মস্থান : কোননগর, হুগলী, চব্বিশ
পরগণা, পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন।
মৃত্যু : ২২ ফেব্রুয়ারী, ১৯৫২ সাল ৷
সমাধি স্থল : ঢাকার আজিমপুর পুরানো
কবরস্থানে ৷
২২শে ফেব্রুয়ারীতে নিহত আরো দুজন
শহীদের নাম বিভিন্ন তথ্যে পাওয়া
যায় যারা শহীদ হয়েছেন রাথখোলা,
নবাবপুরে এরা হলেন:-
১. অহিউল্লা, পিতা রাজমিস্ত্রি
হাবিবুর রহমান বয়স:-৯ বৎসর ও
২. আব্দুল আউয়াল একজন রিক্সা চালক
বয়স:-২৬ বৎসর

1 comment:

কিভাবে একজন সফল ব্লগার হিসেবে নিজেকে তৈরি করবেন

সফল বলি। একজন সফল ব্লগার হিসেবে যদি আপনি নিজেকে প্রস্তুত করতে চান তবে আপনাকে কয়েকটি বিসয়ের উপরে খুব ভালোভাবে গুরুত্বারোপ করতে হবে। নিম্নে ব...